জেরুজালেম এর সৃষ্টি থেকে তার সমাপ্তী পর্যন্ত সকল তথ্য জানতে এই লেখনীটি পড়ুন।
"জেরুজালেম কাহিনী"
♦এক নজরে দেখে নিন আমার এই পোষ্ট টি পড়ার মাধ্যমে আপনারা কি কি জানতে পারবেনঃ
১)) জেরুজালেম এর সৃষ্টি কবে হয়েছিলো??
২)) তারপর সুলাইমান আঃ কর্তৃক মাসজিদে আকসা প্রতিষ্ঠার কাহিনি।
৩)) ইহুদিদের দ্বাড়া জেরুজালেম দখল ও মসজিদে আকসা ভেঙ্গে দেওয়া।
৪)) হযরত ওমর (রাঃ) কর্তৃক জেরুজালেম দখল।
৫)) আল আকসা পুনঃনির্মান।
৬)) আবারও ইহুদিদের দ্বাড়া জেরুজালেম দখল।
৭)) গাজি সালাহ উদ্দিন আয়্যুবি (রহঃ) - এর দ্বাড়া জেরুজালেম পুনরায় মুমিনদের দখলে আসা
৮)) আবারও ইহুদিদের দ্বাড়া জেরুজালেম দখল।
৯)) ফিলিস্থিন ও ইস্রাঈল প্রসঙ্গঃ
১০))জেরুজালেম এর বর্তমান পেক্ষাপট ও আল আকসা ভাঙ্গনের মাধ্যমে দাজ্জালের মন্দির তৈরী
১১)) ইহুদী রা কি থার্ড টেম্পল নির্মান কাজ সম্পুর্ন করবে??
১২)) দাজ্জাল কি আসতে চলেছে??
১৩)) মাহদী নিরাপদে জেরুজালেম এ প্রবেশ করবে!
তাহলে তার পুর্বেই জেরুজালেম মুমিনরা দখলে নিবে।
১৪))কিন্তু কার নেতৃত্বে মুমিন রা আবার জেরুজালেম দখল করবেন?? এবং কবে?? কিভাবে??
১৫)) জেরুজালেম কে নিয়ে ভবিৎষ্যতে কী কী হতে চলেছে??
১৬)) সাহেবে কিরান এর নাম কি হবে??
♦♦♦♦♦♦♦♦♦এই সকল প্রশ্নের উত্তর পাবেন কেবল মাত্র সম্পুর্ন লোখাটি পড়ার পরই। ইংশাল্লাহ।
তাই আশা করবো একটু কষ্ট করে হলেও নিজের জানার পরিধি বাড়ানোর জন্য।
এবং সঠিক তথ্য জানার জন্য সম্পুর্ন লেখাটি পড়বেন ইংশাল্লাহ।
তো চলুন শুরু করা যাকঃ
আছছালামু আলাইকুম।
বন্ধুরা আমি প্রথমত বলি যে, আপনারা জানেন যে, আমি সর্বদাই প্রচেষ্টা করি আপনাদের কে নতুন কোনো ধারনা দেবার জন্য, নতুন কোনো অজানা অধ্যায় আপনাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আমি সর্বদাই চেষ্টা করে থাকি, কেননা, আমি জানি এই মহামারি ফেৎনার জামানায় চোখের দেখা সবকিছুই প্রায় নকল। নকলের ভীরে আসল জিনিসগুলো ধামাচাপা পড়ে গেছে। তাই আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে আসল জিনিস গুলো তুলে ধরতে আমি বহু পরিশ্রম করি।কেননা, আমার মাধ্যমে যদি কেও সুপথ প্রাপ্ত হয়,তবে সেই উছিলায় আল্লাহ আমাকে জান্নাত দান করতে পারেন ইংশাল্লাহ!
এখন আসছি মুল আলোচনায়ঃ
জেরুজালেম এর সুচনা থেকেঃ
খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০০-৩৫০০ এর মাঝামাঝি সময়ে জেরুজালেমে সর্বপ্রথম বসতি স্থাপিত হয়। আরবি শব্দ সালাম এবং হিব্রু "শালিম"-এর সম্মিলিত রূপ হিসেবে ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এটির নামকরণ করা হয় ‘রুসালিমাম’। ১৫৫০-১৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে তৎকালীন মিশরের রাজা জেরুজালেমকে মিশর সাম্রাজ্যের একীভূত করে সাম্রাজ্যকে ভূ-মধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। ক্রমান্বয়ে মিশরীয় শাসকদের ক্ষমতা লোপ পেতে থাকলে সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে স্বাধীনতার দাবী উত্থাপিত হয়। বাইবেলের বর্ণনামতে, জেরুজালেম তখন জেবুস এবং এর অধিবাসীগণ জেবুসিয়াস নামে পরিচিতি লাভ করে।তারপর।
সুলাইমান আঃ কর্তৃক আল আকসা প্রতিষ্ঠা থেকে বর্তমান অবস্থাঃ
বাইবেলের এক বর্ণনায় পাওয়া যায়, খ্রিস্টপূর্ব ১১শ শতকে রাজা দাউদের (দাউদ আ.) জেরুজালেম জয়ের পূর্বে শহরটি জেুবুসিয়াসদের বাসস্থান ছিল। পরবর্তীকালে তার পুত্র সুলাইমান আ. শহরের দেয়াল সম্প্রসারিত করেন এবং মসজিদে আকসা প্রতিষ্ঠা করেন।মসজিদুল আকসা (আরবি: المسجد الاقصى) (আল-আকসা মসজিদ বা বাইতুল মুকাদ্দাস [৪][৫] নামেও পরিচিত) ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ।]জেরুজালেমের পুরনো শহরে এটি অবস্থিত। এটির সাথে একই প্রাঙ্গণে কুব্বাত আস সাখরা, কুব্বাত আস সিলসিলা ও কুব্বাত আন নবী নামক স্থাপনাগুলো অবস্থিত। স্থাপনাগুলো সহ এই পুরো স্থানটিকে হারাম আল শরিফ বলা হয়।এছাড়াও স্থানটি "টেম্পল মাউন্ট" বলে পরিচত এবং ইহুদি ধর্মে পবিত্র বলে বিবেচিত হয়। ইসলামের বর্ণনা অণুযায়ী মুহাম্মদ (সা) মিরাজের রাতে মসজিদুল হারাম থেকে আল-আকসা মসজিদে এসেছিলেন এবং এখান থেকে তিনি ঊর্ধ্বাকাশের দিকে যাত্রা করেন।
উপাসনার স্থানটিই ইসলামের নবী সুলাইমান (আঃ) তৈরি করেছিলেন যা পরবর্তীতে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল । মুসলমানরা বিশ্বাস করে , নির্মাণের পর থেকে এটি ঈসা (আঃ) (খ্রিস্টধর্মে যিশু) সহ অনেক নবীর দ্বারা এক আল্লাহকে উপাসনার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। এই স্থান মুসলিমদের প্রথম কিবলা (প্রার্থনার দিক) হিজরতের পর কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণে কাবা নতুন কিবলা হয়। বর্তমানে "আল-আকসা" মসজিদ বলতে বোঝাায় কিবলি মসজিদ , মারওয়ানি মসজিদ ও বুরাক মসজিদ (৩টির) এর সমন্বয় যা "হারাম আল শরীফ" এর চার দেয়াল এর মধ্যেই অবস্থিত।
খলিফা উমর বর্তমান মসজিদের স্থানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তীতে উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিকের যুগে মসজিদটি পুনর্নির্মিত ও সম্প্রসারিত হয়। এই সংস্কার ৭০৫ খ্রিষ্টাব্দে তার পুত্র খলিফা প্রথম আল ওয়ালিদের শাসনামলে শেষ হয়। ৭৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ভূমিকম্পে মসজিদটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে আব্বাসীয় খলিফা আল মনসুর এটি পুনর্নির্মাণ করেন। পরে তার উত্তরসুরি আল মাহদি এর পুনর্নির্মাণ করেন। ১০৩৩ খ্রিষ্টাব্দে আরেকটি ভূমিকম্পে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ফাতেমীয় খলিফা আলি আজ-জাহির পুনরায় মসজিদটি নির্মাণ করেন যা বর্তমান অবধি টিকে রয়েছে।
বিভিন্ন শাসকের সময় মসজিদটিতে অতিরিক্ত অংশ যোগ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে গম্বুজ, আঙ্গিনা, মিম্বর, মিহরাব, অভ্যন্তরীণ কাঠামো। ১০৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ক্রুসেডাররা জেরুজালেম দখল করার পর তারা মসজিদটিকে একটি প্রাসাদ এবং একই প্রাঙ্গণে অবস্থিত কুব্বাত আস সাখরাকে গির্জা হিসেবে ব্যবহার করত। সুলতান সালাহউদ্দিন জেরুজালেম পুনরায় জয় করার পর মসজিদ হিসেবে এর ব্যবহার পুনরায় শুরু হয়। আইয়ুবী, মামলুক, উসমানীয়, সুপ্রিম মুসলিম কাউন্সিল ও জর্ডানের তত্ত্বাবধানে এর নানাবিধ সংস্কার করা হয়। বর্তমানে পুরনো শহর ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তবে মসজিদটি জর্ডানি/ফিলিস্তিনি নেতৃত্বাধীন ইসলামি ওয়াকফের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। [৩২]
সুলাইমান আঃ এরপর ইহুদিদের জেরুজালেম দখল ও তারপর খলীফা হযরত ওমর রাঃ এর নেতৃত্বে পুনরায় জেরুজালেম দখলঃ
৭ম শতকে অর্থাৎ ৬৩৭ সালে খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব রা. এর শাসনামলে মুসলমানগণ জেরুজালেম জয় করে একে মুসলিম সাম্রাজ্যের অঙ্গীভূত করে নেন। তিনি শহরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে চুক্তিবদ্ধ হন।ওমর রাঃ এর পর আবারও ইহুদীদের দ্বাড়া জেরুজালেম দখলঃ
তারপর খ্রিষ্টানদের দখল তারপর আবার উসমানী খেলাফতের মাধ্যমে মুমিনদের দখল, আবারও ব্রিটিস দের দখলঃ১০৯৯ সালে ১ম ক্রুসেডের সময় ইউরোপীয় খ্রিস্টান সেনাবাহিনী জেরুজালেম দখল করে।
গাজী সালাহ উদ্দিন আয়্যুবি (রাহঃ) এর নেতৃত্বে জেরুজালেম বিজয় এবং তারপরের কাহিনিঃ
১১৮৭ সালের ২ অক্টোবর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ূবী কর্তৃক বিজিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাদের আয়ত্ত¡াধীন ছিল। ১২১৯ সালে দামেস্কের সুলতান মুয়াজ্জিম নগরের দেয়াল ধ্বংস করেন। ১২৪৩ সালে মিশরের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী জেরুজালেম জার্মানির দ্বিতীয় ফ্রেডারিকের হস্তগত হয়। ১২৩৯ সালে তিনি দেয়াল পুনর্নির্মাণ করেন কিন্তু কেরাকের আমীর সেগুলোকে ধ্বংস করে দেন। ১২৪৩ সালে জেরুজালেম পুনরায় খ্রিস্টানদের দখলে আসে এবং দেয়ালসমূহ সংস্কার করা হয়। কিন্তু ১২৪৪ সালে তাতাররা শহরটি দখল করে এবং সুলতান মালিক নগরপ্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেন। ১৫১৭ সালে উসমানী খলিফা ইয়াভুজ সুলতান সেলিম কুদসকে উসমানী খিলাফতের অন্তর্ভুক্ত করেন।
১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড বেলফোরের ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিন উসমানী খিলাফতের হাতছাড়া হয়ে ব্রিটিশদের দখলে চলে যায়।
এতদিন জেরুজালেম একটি পবিত্র ধর্মস্থান হলেও তা রাজধানীর স্বীকৃতি পায়নি। ব্রিটিশরা সেই স্বীকৃতি দেয়। আর তারই সঙ্গে শুরু হয়ে যায় নতুন সংঘর্ষের প্রেক্ষাপট।
ফিলিস্থিন ও ইস্রাইল প্রসঙ্গঃ থেকে বর্তমান সময়ঃ
ইউরোপ জুড়ে ইহুদি বিদ্বেষের সূচনা হলে দলে দলে ইহুদি শরণার্থীরা ভিড় জমায় ফিলিস্তিনে, বিশেষ করে জেরুজালেমে। ১৫১৭ থেকে মুসলিম অটোমান শাসকদের অধীনে থাকা ফিলিস্তিনিদের কাছে অস্তিত্বের সঙ্কট তৈরি হয়। ঠিক তার উল্টো প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় ইহুদিদের মধ্যে। তাদের মধ্যে নিজেদের জন্য একটা আলাদা দেশ তৈরির আকাঙ্খা প্রবল হতে থাকে। কিন্তু এই আকাঙ্খার পিছনে তখন ধর্মের থেকেও জাতীয়তাবোধ ছিল প্রকট। রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপ থেকে আসা এই ইহুদিদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘাতের ক্ষেত্র ক্রমেই প্রলম্বিত হয়। তৈরি হয় ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব জাতীয়তাবাদ। যার নেতৃত্বে ছিল নামকরা ফিলিস্তিনি পরিবারগুলি। শুরু হয়ে যায় একের পর এক দাঙ্গা, রক্তপাত।
পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া যায় ১৯৩৯ সালে ইহুদিদের ফিলিস্তিনে আসার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ব্রিটিশ প্রশাসন। এই নিষেধাজ্ঞার কারণেই, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে অনেক ইহুদি আশ্রয়ের জন্য ফিলিস্তিনে আসতে পারেনি। ১৯৪৭ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধে। সমস্যা মেটাতে ফিলিস্তিনকে দুই ভাগে বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জাতিসংঘ। এক ভাগের অধিকার পাবে ইহুদিরা, অন্য ভাগে আরব ফিলিস্তিনীয়রা। আর জেরুজালেমের জন্য থাকবে বিশেষ মর্যাদা।
সে কোনও ভাগের অংশ হবে না। আন্তর্জাতিক একটি কর্তৃপক্ষ এটি দেখভাল করবে। এ পরিকল্পনা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানাল আরবরা। নিজেদের অধিকৃত অঞ্চলকে পরের দিন স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করে ইহুদিরা। তৈরি হয় ইসরাইল। জেরুজালেমের পশ্চিম অংশের দখল থাকল তাদের হাতে। পূর্ব অংশ, যার মধ্যে শহরের পুরনো অংশ, ফিলিস্তিনিদের হয়ে দখলে রাখে জর্ডান। লাখ লাখ ফিলিস্তিনি ঘরছাড়া হয়।
১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ সেনা প্রত্যাহার করা হলে সে বছরই ১৪ মে ডেভিড বেনগুরিনের নেতৃতে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ইসরাইল পশ্চিম জেরুজালেম দখল করে। এরপরে বেশ কিছু দিন জেরুজালেমের অধিকারের জন্য দু’পক্ষ থেকেই তেমন দাবি ওঠেনি। জর্ডানের শাসক, রাজা প্রথম আবদুল্লাহ জেরুজালেম থেকে নিজেদের রাজধানী আম্মানকে ঢেলে সাজতে অনেক বেশি ব্যস্ত ছিলেন।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক চাপে ইসরাইলের শাসকরাও সেভাবে জেরুজালেমকে নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি। বরং তেলআবিব, হাইফা, আসকালোন-এর মতো শহর উন্নয়নেই ব্যস্ত ছিল। ইসরাইলের প্রথম দু’দশকের শাসকদের মধ্যে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী নেতাদের সংখ্যা ও প্রভাব ছিল বেশি। এই নেতারা বুঝেছিলেন, জেরুজালেমের অধিকার পেলেও বা সেখানে রাজধানী বানালেও, কর্তৃত্ব বজায় রাখা বেশ শক্ত। আন্তর্জাতিক মহলও জেরুজালেম ভুলে, তেলআবিবে দূতাবাস খুলতে শুরু করে। তবে আরব-ইসরাইল বিবাদ চলতেই থাকে।
পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে ১৯৬৭ সালের জুনে। মিশরের তৎকালীন শাসক জামাল আব্দেল নাসের তাইরান প্রণালী দিয়ে ইসরাইলের জাহাজ যাতায়াত বন্ধ করে দেন। মিশর-ইসরাইল সীমান্তে সেনা সমাবেশ করেন।নাসেরের উদ্দেশ্য ছিল ভয় দেখানো। কিন্তু হঠাৎ পাল্টা বিমানহামলা চালিয়ে সব ওলট-পালোট করে দেয় ইসরাইল। সে হামলায় নাসেরের পুরো বিমানবাহিনী কার্যত ধ্বংস হয়ে যায়। পাশাপাশি গাজা ও সিনাই-এ স্থলযুদ্ধ শুরু করে ইসরাইল। এই অতর্কিত হামলায় দিশেহারা হয়ে পড়ে মিশর। নাসেরের চেষ্টায় সিরিয়া ও জর্ডানও যুদ্ধ নামে। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ছয় দিনের যুদ্ধ শেষে ইসরাইল মিশরের কাছ থেকে গাজা ও সিনাই, পশ্চিম তীর আর সিরিয়ার কাছ থেকে গোলান মালভূমির দখল নেয়। সে সময়ই তারা চূড়ান্তভাবে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয়।
১৯৬৭ সালে ৬ দিনের আরব- যুদ্ধে ইসরাইল পাশাপাশি ১৯৮০ সালের জুলাই মাসে ইসরাইল পূর্ব এবং পশ্চিম উভয় জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে। ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। প্রতিবাদে বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের সংগঠন ওআইসি তাৎক্ষণিক জরুরি বৈঠক আহবান করে ১৩ ডিসেম্বর পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী ঘোষণা করে। ফলে জেরুজালেম এখন দুই রাষ্ট্র তথা মধ্যপ্রাচ্য সংকটের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ সংকট ঘনীভূত হয়েছে আগ বাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে।
এই হলো বর্তমান পর্যন্ত কাহিনি।
বর্তমানে থার্ড টেম্পল নির্মানের জঘন্য অধ্যায় এবং এর পরিনতিঃ
প্রথম থেকে বলছিঃ
সুলাইমান (আঃ) এর ইবাদাতগৃহ ইহুদিদের কাছে ফার্স্ট টেম্পল নামে পরিচিত। খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৯ অব্দে ব্যাবিলনের রাজা জেরুজালেম অবরোধ করেন এবং খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৬ অব্দে ফার্স্ট টেম্পল ধ্বংস করে ফেলা হয়। ইহুদিদেরকে ঐ সময় ব্যাবিলনে নির্বাসিত করে দেওয়া হয়েছিল। ব্যাবিলনের পতনের পর খ্রিস্টপূর্ব ৫৩৯ অব্দে পারস্যের রাজা সাইরাস দ্য গ্রেট ইহুদিদের কিংডম অফ জুডাতে ফিরে আসার অনুমতি দেন। হিব্রু বাইবেল অনুযায়ী ৫৩৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সেকেন্ড টেম্পল নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৬৬ খ্রিস্টাব্দে ইহুদিরা রোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। অতঃপর ৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সেনাবাহিনী সেকেন্ড টেম্পল ধ্বংস করে ফেলে।
২০০০ বছর ধরে ইহুদিরা তাদের স্বপ্নের থার্ড টেম্পল বানানোর আশায় বসে আছে। থার্ড টেম্পল তৈরি না করতে পারলে কোন ইহুদিই দাজ্জালকে প্রতিশ্রুত মাসিহ হিসাবে মেনে নেবে না। দাজ্জালকে অবশ্যই ইহুদিদের স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনতে হবে।
“মসিহ, বিধাতার জন্য একখানা গৃহ নির্মাণ করবেন”
(বাইবেলের পুরাতন নিয়ম, ১ খান্দাননামা ১৭:১১-১৫)।
আর ইহুদিদের বিশ্বাস তাদের উপাসনালয়ের অবস্থান টেম্পল মাউন্টে, ঠিক যেখানটায় মসজিদুল আকসা অবস্থিত।
থার্ড টেম্পলের নকশা রেডি করে ফেলেছে ইহুদিরা। থার্ড টেম্পলের জন্য বিভিন্ন ঐতিহাসিক জিনিসপত্র তাদের দরকার, বিভিন্ন মূল্যবান পাথর ইত্যাদি। তাদের কিং মেসায়াহকে বরণ করতে ও অভিষিক্ত করতে পবিত্র তেল দরকার যা হিব্রু বাইবেলে বর্ণিত গাছগাছড়া থেকে বানাতে হয়। কাগজের মুদ্রা টেম্পলে ব্যবহার করা হারাম, টেম্পলে ব্যবহার করতে হবে রৌপ্য মুদ্রা। এসব কিছু রেডি করে ফেলেছে ইহুদিরা। তাদের টেম্পল ইন্সটিটিউট জোরেশোরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
♦এখন মুল প্রশ্ন হলো যে, অভিশপ্ত ইহুদী জাতী কি সত্যিই মাসজিদে আকসা" ধ্বংস করে তৃতীয় মন্দির নির্মান কাজ সম্পুর্ন করবে??
♦এই প্রশ্নটির উত্তর পেতে হলে তার আগে জেনে নিতে হবে ভবিৎষ্যতে জেরুজালেম কবে এবং কার নেতৃত্বে মুমিন দের দখলে আসবে???
________________♥______________
চলুন দেখি হাদিছ কি বলে??
বন্ধুরা আমি কিছু হাদিছ সংগ্রহ করেছি, যা হয়তো আপনারা সংগ্রহ করেন নাই।কেননা আপনারা সবাই প্রায়, ছিয়া ছিত্তার বাইরে হাদিছ গুরো কে পাত্তা দেন না, অথচ, নবী ছাঃ বা তার ছাহাবী গন অথবা কোন তাবেইও বলেন নি যে, ছিয়াহ ছিত্তার বাইরের কোন হাদিছ মানা যাবেনা। বস্তুুত তা করলে মোনাফেকি হবে।
তো চলুন এমন ৫ টি হাদিছ দেখে নেই, যা ভবিৎষ্যতে
ইমাম মাহদির পুর্বে কার নেতৃত্বে জেরুজালেম আবারও মুমিনদের দখলে আসবে তা জানতে পারবো।
জেরুজালেম মুমিনদের দখলে আবারও আসতে চলেছেঃ
_______________________________
((১))♥হযরত কাতাদাহ রাঃ বলেন,
রাসুল (সাঃ)- বলেছেন,
মাহদীর আগমনের পূর্বে আভিশাপ্ত জাতির সাথে
" শামীম বারাহর- নেত্রিত্ব মুমিনদের যুদ্ধ হবে।
সেই যুদ্ধে জেরুসালেম মুমিনদের দখলে আসবে।
(আখিরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ,হা.৯৭)
((২))♥হযরত মুআয ইবনে যাবাল রাঃ বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন,অবশ্যেই আমার বংশের মাহদীর আগমনের পূর্বে কিয়ামত সংঘটিত হবে না।
আর সে নিরাপদে জেরুজালেম ভ্রমণ করবে।
আর ততক্ষন মাহদী জেরুজালেম ভ্রমন করবে না, যতক্ষন না অভিশপ্ত জাতি থেকে তা♥ শামীম বারাহর দখলে না আসে।
আর অবশ্যেই তা দিনের আলোর মত সত্য।
(আখিরুজ্জামনা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ,হাদিছ নং,৯৬)
((৩))♥হযরত সাদ ইবনে ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন,
রাসুল (সা.)বলেছেন,
জেরুজালেম মুমিনদের দখলে যাবে,আবার তা ইহুদী সম্প্রয়াদ দখলে নেবে। অতঃপর আল্লহ তা আলা
""""" শামীম বারাহর """"-মাধ্যেমে আবার তা মুমিনদের দখলে আনবে।তখন মাহদী সেখানে নিরাপদে ভ্রমন করবে।
(আখিরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ,হাদিছ নংঃ৯৮)
((৪))♥হযরত জাবির রাঃ বলেন,রাসূল সাঃ বলেছেন,অভিশপ্ত জাতির নিকট থেকে হিন্দুস্থান বিজয়ের সৈনিকরা অর্থাৎ গাজোয়াতুল হিন্দের বিজয়ী সৈনিকরা জেরুজালেম দখলে নেবে।
আর তাদের সেনাপতি হবে শামীম বারাহ, যার উপাধী হবে ★সাহেবে কিরাণ।★
(আখিরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ,১০০)
((৫))♥হযরত আনাস রাঃ বলেন,রাঃ বলেন, রাসুল সাঃ বলেছেন, দুটি বালকের একসঙ্গের আক্রমনে ইহুদী সম্প্রদায় জেরুজালেম হারিয়ে ফেলবে।তাদের একটির নাম শুয়াইব ইবনে ছালিহ,অপরটির নাম হবে শামীম বারাহ ।
(আখিরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ,৯১)
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার।
আমরা জেনে নিলাম যে,
এই ইহুদি জাতির কাছ থেকে জেরুজালেম আবার আমাদের দখলে আসতে চলেছে।
আর সেই জেরুজালেম দখলের জিহাদে সেনাপতিত্ত্ব করবেন শামীম বারাহ।
আর ৪ নং হাদিছে বলা আছে শামীম বারাহ এর উপাধি হবে সাহেবে কিরান।
আর আমরা ইতপুর্বে জানতাম যে ইমাম মাহমুদ হাবিবুল্লাহ এর প্রিয় বন্ধু ও সহচরের উপাধী হবে সাহেবে কিরান।
এটা আমরা সবাই কমবেশি জানতাম।
তবে তার নাম আমরা কেউ জানতাম না।
শুধুমাত্র ক্বাসিদাহ এবং আগামী কথন থেকে জানতে পেরেছিলাম যে, তার নামের প্রথম হরফ হবে "শীন" হরফ দিয়ে বা বাংলাতে "শ"- দিয়ে। আলহামদুলিল্লাহ এই হাদিছ বলছে সাহেবে কিরান এর প্রকৃত নাম হবে শামীম।
আর তিনি যেহুতু হযরত বেলাল ইবনে বারাহ( রাঃ) এর বংশধর সেহুতু তার নামের শেষেও ""বারাহ"" কথাটি এসেছে।তাই তার নামম **শামীম বারাহ**!
এই শামীম বারাহ এর কথাই রছুল ছাঃ বলেছিলেন বেলাল রাঃ কে। হাদিছে এসেছেঃ
♥হযরত আনাস রাঃ বলেন,একদা রছুল ছঃ এর এক মজলিসে আমি আর বিলাল রাঃ বসা ছিলাম। সে সময়ে আল্লাহর রছুল ছঃ বিলাল রাঃ এর কাধে তার ডান হাত রেখে বললেন
,হে বিলাল! তুমি কী জানো তোমার বংশে আল্লাহ এক উজ্জল তারকার জন্ম দিবেন?যে হবে সে সময়ের সবচেয়ে সভাগ্যবান ব্যাক্তি। অবশ্যেই সে একজন ইমামের সহচর হবে।রাবি বলেন,সম্ভবত রছুল ছঃ বলেছেন,সেই ইমামের আগমন,ইমাম মাহদীর পূর্বেই ঘটবে।
(আসারুস সুনান, ৩২৪৮)
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
বিঃ দ্রঃ যদিও ৫ নং হাদিছে এসেছে যে শুয়াইব ইবনে ছালিহও শামীম বারাহ সাহেবে কিরান এর সাথে থাকবেন, তবে তখন তার ভুমিকা কম হবে। কেননা, তিনি ইমাম মাহদির সহচর হবেন। আর মাহদির পুর্বে তিনি শামিম বারাহ সাহেবে কিরান ও ইমাম মাহমুদ কে কিছু ক্ষেত্রে সাহায্য করবেন।
((যেমনঃ কালোপতাবাহিদের মধ্য থেকে ৪ বা ৫ হাজার সৈন্যদের নেতৃত্ব দিবেন।))
♦এখন আসি এই বিজয় কবে আসবে??
৪ নং হাদিছটি বলছেঃ
♦♦হযরত জাবির রাঃ বলেন,রাসূল সাঃ বলেছেন,অভিশপ্ত জাতির নিকট থেকে হিন্দুস্থান বিজয়ের সৈনিকরা অর্থাৎ গাজোয়াতুল হিন্দের বিজয়ী সৈনিকরা জেরুজালেম দখলে নেবে।
আর তাদের সেনাপতি হবে শামীম বারাহ, যার উপাধী হবে ★সাহেবে কিরাণ।★
(আখিরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ,১০০)
তাহলে বোঝা গেলো
গাজোয়াতুল হিন্দের পর এবং ইমাম মাহদির প্রকাশের পুর্বে শামিম বারাহ জেরুজালেম দখল করবেন।
বন্ধুরা আমি পুর্বেও হাদিছ থেকে প্রমান করেছি যে, গাজোয়াতুল হিন্দ ২০২৪-২৫ সাল পর্যন্ত চলবে।এবং ২০২৮ সালে ইমাম মাহদি আসবেন((হাদিছের গবেষনার ফল,,তবে রব অধিক জানেন))
তাহলে এই ২০২৫ এবং ২০২৮ এর মাঝামাঝি সময়ে শামিম বারাহ (সাহেবে কিরান) জেরুজালেম দখল করবেন।অর্থাৎ,২০২৬/২৭ সালে ইংশাল্লাহ।
এই হাদিছ আরও প্রমান করে যে, ইমাম মাহদির পুর্বেই গাজোয়াতুল হিন্দ হবে।
এখন আরও একটি জটিলতা আছে যে,
ইহুদিরা যে আল আকসা মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির তৈরী করতে যাচ্ছে তা কি সত্যিই তারা করবে??
উত্তরে বলবো আল্লাহই অধিক জানেন।
আর যেহুতু আল আকসা মসজিদ ইতপুর্বেও সম্পুর্ন ভেঙ্গেছিলো ইহুদিরা।
তাই এবারও ভাঙ্গলে অবাক হবার কিছু নেই।
তাছাড়া মনে হয়,তারা তৃতীয় মন্দির নির্মান করবে কিন্তু দাজ্জাল আসবেনা।
তারপর ইমাম মাহমুদ হাবিবুল্লাহ এবং শামীম বারাহ সাহেবে কিরান এর নেতৃত্বে গাজোয়াতুল হিন্দের পর যখন এই বিরাট ভারোতীয় উপমহাদেশ তারা শাষন করবে, তখনি সাহেবে কিরান তার রাজ্যের সৈন্য দের নিয়ে জেরুজালেম আক্রমন করবেন এবং বিজয়ি হবেন।
তারপর মাহদী আসবেন এবং নিরাপদে জেরুজালেম ভ্রমন করবেন।
তবে হাদিছ অনুযায়ী জেরুজালেম দখলে ইমাম মাহমুদ অংশ নিবেন না।
কেননা,আমরা হাদিছে জেনেছি যো তিনি সারিরিক ভাবে দুর্বল হবেন। তাই তার পক্ষে বারবার জিহাদ করাটা কষ্টসাধ্য হবে।।
♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦
ধন্যবাদ সবাইকে এতোটা সময় দিয়ে পড়ার জন্য।
আছছালামু আলাইকুম।
No comments:
Post a Comment