আমাদের বর্তমান সমাজে প্রায় ৯৫% মানুষ (এখানে বড় বড় আলেমরাও এবং সাধারণ মানুষরাও) বিশ্বাস করেন বা মনে করেন যে "ইমাম মাহাদী"র সময়ে হযরত ঈশা (আ.) আকাশ থেকে অবতরন করবেন।
আসলে তাদের এই ধারণাটি যে সম্পণূই ভুল তা হাদিস পরলে বা দেখলে বুঝা যায়।
আর তারা মনে করেন যে গাজওয়াতুলহিন্দ যুদ্ধ টাও ইমাম মাহদি এবং ঈশা (আ) এর সময়েই হবে। তারপর তার সময়েই দাজ্জাল আত্নপ্রকাশ করবে, এবং সর্বশেষ হযরত ঈসা (আঃ) আকাশ থেকে অবতরণ করে ইমাম মাহদীর পিছনে নামাজ পরবেন এবং দাজ্জাল কে হত্যা করবেন। অর্থাৎ ইমাম মাহদীর শাসন কাল ৭ বছরের মধ্যেই সব কিছু হয়ে যাবে। তারপর ঈসা (আঃ) ৪০ বছর রাজত্ব করবেন, তারপর সকল ইমানদার মুসলমানগন একযোগে মৃত্যু বরণ করবেন। অর্থাৎ আগামী ৪৯ বছরের মধ্যে সব কিছু ঘটে যাবে। কিন্তু আসলেই কি তাদের ধারণা মত এরকম হবে? নাকি ইমাম মাহদী ও ঈসা (আঃ) আলাদা দুটি যুগে আসবেন???
★কেন তারা এরকম ধারণা করছেন???
_____________________________________
** হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "সেদিন কেমন হবে, যখন মরিয়মের পুত্র হযরত ঈসা (আঃ) তোমাদের মাঝে অবতরণ করে তোমাদেরই একজনের পিছনে আচরের নামাজ আদায় করবেন"? (সহিহ বুখারী)
★উল্লেখ এই হাদিসে কোথাও ইমাম মাহদীর কথা উল্লেখ করা হয়নি, বরং এখানে স্পষ্ট করে "তোমাদের ইমামের " কথা বলা হয়েছে।
** হযরত জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "আমার উম্মতের একদল মুজাহিদ কিয়ামত পর্যন্ত শত্রুর উপর বিজয়ী থাকবে। একপর্যায়ে আকাশ থেকে ঈসা ইবনে মারিয়ম (আঃ) অবতরণ করলে মুসলমানদের সেনাপতি বলবে- আসুন, নামাজের ইমামতি করুন! তখন ঈসা (আঃ) বলবেন - না, বরং তোমাদের একজন অপরজনের নেতা (অর্থাৎ তুমি ইমামতি কর)। এটি এই উম্মতের জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একটি বিরাট সম্মানের"।
(সহিহ মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
★এই হাদিসেও ইমাম মাহদীর কথা বলা হয়নি, বরং বলা হয়েছে, "তোমাদের একজন অন্যজনের আমীর"।
** হযরত আবু সাঈদ খুদুরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "ঈসা ইবনে মারিয়ম (আঃ) যার পিছনে নামাজ পরবেন, তিনি তোমাদের মধ্য থেকেই একজন"।
(হাদিসের মানঃ সহিহ, "কিতাব আল মাহদী" লেখকঃ হাফিজ আবু নাঈম রহঃ "ফাইয়াদ আল কাদির" লেখকঃ আল মানাওয়ী)
★এই হাদিসেও কোথাও ইমাম মাহদীর কথা উল্লেখ করা হয়নি, বরং এখানেও "তোমাদের একজনের" কথা বলা হয়েছে।
** হযরত উসমান ইবনে আবুল আস (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি, “হযরত ঈসা (আ.) আচরের নামাযের সময় অবতরণ করবেন। তখন 'মুসলমানদের আমীর' তাঁর নিকট আবেদন জানাবেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি নামাজের ইমামতি করুন । তিনি বলবেন, এ উম্মত একে অন্যের উপর আমীর (অর্থাৎ তোমাদের জন্যই নামাজের ইকামত দেওয়া হয়েছে, তাই তোমরাই নামাজ পরাও) তখন আমীর অগ্রসর হয়ে নামায পড়াবেন।”
(মুসনাদে আহমদ, ৪র্থ খণ্ড, ২১৬ পৃষ্ঠা/ দুররে মানসুর, ২য় খণ্ড, ২৪৩ পৃষ্ঠা/ মুসতাদরাকে হাকিম, ৪র্থ খণ্ড, ৪৭৮ পৃষ্ঠা)
★এই হাদিসেও ইমাম মাহদীর কথা কোথাও বলা নেই, বরং বলা হয়েছে "মুসলমানদের আমিরের" কথা। তাই বেশিরভাগ আবেগী মুসলমান মনে করেছেন, এসকল হাদিস গুলোতে মুসলমানদের ইমাম বলতে, ইমাম মাহদীর কথা বলা হয়েছে। যদিও এই ধারণাটি একদমই ঠিক নয়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর এমন কোন সহিহ, হাসান ও জয়িফ হাদিসে ও সরাসরি বলা হয়নি যে, হযরত ঈসা (আঃ) ও মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ আল মাহদী একই সময়ে আত্নপ্রকাশ করবেন। বরং অসংখ্য হাদিস রয়েছে, যে হাদিস গুলো নিয়ে গবেষণা করলে বুঝা যায়, হযরত ঈসা আঃ ও ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের মধ্যে রয়েছে বিশাল একটা সময়ের ব্যবধান।
ইমাম মাহদী ও হযরত ঈসা (আঃ) একই সময়ে আবির্ভাব হবেনা, তার প্রমাণ সমূহ -
___________________________________________(১) হযরত আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)থেকে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না কাহ্তান গোত্র থেকে এমন এক লোক বের হবে, যে মানুষকে লাঠি দিয়ে তাড়িয়ে দেবে"।
(সহিহ বুখারী, আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৩২)
যদি ইমাম মাহদী ও ঈসা (আঃ) একই সময়ে আত্নপ্রকাশ হয়, তাহলে তিনি কখন খলিফা হবেন? এই কাহতানী খলিফা সম্পর্কে আরো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে কিতাবুল ফিতানের এই হাদিসটিতে।
** হযরত আরতাত (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মাহদির মৃত্যুবরণ করার পর কাহতানগোত্রের উভয় কান ছিদ্রবিশিষ্ট একজন লোক শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করবে। তার চরিত্র হবে হুবহু মাহদির মত। তিনি দীর্ঘ ২০ বৎসর পর্যন্ত শাসক হিসেবে থাকার পর, তাকে অস্ত্রের হত্যা করা হবে। এরপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বংশধর থেকে জনৈক লোকের আত্মপ্রকাশ হবে। যিনি উত্তম চরিত্রের অধিকারী হবেন। তার হাতে কায়সার সম্রাটের শহর(ইউরোপ) বিজয় হবে। তিনিই হবেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উম্মতের মধ্যে সর্বশেষ খলীফা বা বাদশাহ। তার যুগে দাজ্জালের আবির্ভাব হবে এবং সায়্যিদুনা হযরত ঈসা (আঃ) আসমান থেকে অবতরণ করবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১২৩৪ ]
(২) হযরত জাফর সাদিক (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "কিভাবে আমার উম্মত ধ্বংস হয়ে যাবে? যখন এই উম্মতের শুরুতে আমি মুহাম্মদ (সাঃ) আছি, মধ্যখানে মাহদী রয়েছে, আর এই উম্মতের শেষে হযরত ঈসা ইবনে মারিয়ম (আঃ) রয়েছেন?।
(মিশকাত, হাকেম,কানজুল উম্মাল, রাজেন, তারিখে দিমাশক, তারিখ উল খিলাফাহ)
(৩) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আমার উম্মত ধ্বংস হয়ে যাবে না, কারণ (এই উম্মতকে পরিচালনা করার জন্য) শুরুতে আমি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও শেষে রয়েছেন মরিয়মের পুত্র হযরত ঈসা (আঃ)। আর আমাদের দুইজনের মধ্যখানে রয়েছেন ইমাম মাহদী ।
(এই হাদিসটি হাফেজ আবু নাঈম ও ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহঃ এর "মুসনাদে আহমাদ" গ্রন্থে সংগ্রহ করেছেন, এছাড়াও নুয়াইম বিন হাম্মাদের "আল ফিতান" এবং জালাল উদ্দিন সুয়ুতীর "আল আরিফুল আরদি ফি আখবার আল মাহদী"বইতেও রয়েছে)
(৪) হযরত জাবের বিন সামুরা (রাঃ) হতে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) কে আমি বলতে শুনেছি যে, এই দ্বীন (ধর্ম) প্রতিষ্ঠিত থাকবে ততদিন পর্যন্ত, যতদিন না তোমাদের মাঝে ১২ জন খলিফাহ না আসে। তারা সবাই তাদের প্রত্যেক উম্মতকে নিজের নিকট একত্রিত করবে। সাহাবী বলেন, তারপর রাসুল (সাঃ) একটি কথা বললেন, তা আমি বুঝতে পারিনাই। আমি আমার পিতাকে প্রশ্ন করলাম রাসুল (সাঃ) কি বলেছেন? পিতা বললেন, তিনি বললেন, খলিফাহ সকলেই কুরাইশদের মধ্য থেকেই হবে।
( সহিহ মুসলিম, আবু দাউদ - ৪৯৭৯)
"উক্ত ১২ জন খলিফা সবাই হবেন কুরাইশ বংশের এবং তারা প্রত্যেকেই খেলাফতের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকবেন এবং মুসলিমদেরকে ঐক্যবদ্ধ করবেন।শিয়া সম্প্রদায়ের মতে, ১২ জন খলিফাই হলেন আহলে বাইত তথা, হযরত আলী (রাঃ) এর বংশধর থেকে, এবং এই মতটি হল বাড়াবাড়ি ও ভূল। যদিও হাদিসে কুরাইশদের কথা বলা হয়েছে, আহলে বাইতের কথা বলা হয়নি"। (তাফসীর ইবনে কাসীর)
তবে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা’আর মতে, এখন পর্যন্ত ৪/৫ জন খলিফা হয়েছেন, অর্থাৎ১২ জন খলিফার এখনো আত্নপ্রকাশ হয়নি। যেমনঃ
١, হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)
٢, হযরত উমর ফারুক (রাঃ)
٣, হযরত উসমান ইবনে আফ্ফান (রাঃ)
٤, হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ)
٥, হযরত উমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রাঃ)
তার মানে, ইমাম মাহদীর মৃত্যুর পরেও অনেক কুরাইশ বংশের খলিফা হবেন। কিন্তু কারা হবে তা নিচে আলোচনা করা হবে।
(৫) হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "আমার (মৃত্যুর) পর আসবে খিলাফত, তার পর আসবে রাজতন্ত্র, তারপর অত্যাচারী রাজার শাসন, তার পর আবার অত্যাচারী রাজার শাসন। তারপর আরেক অত্যাচারী ব্যাক্তির পর আমার বংশধর(ইমাম মাহদী) থেকে একজন আসবে। যিনি পৃথিবীকে ন্যায় বিচার দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেন। তার পর আসবে কাহতানী। এটা এরকম সত্য, যেমনি ভাবে আল্লাহ আমাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন, এর ব্যতিক্রম কখনো হবেনা"।
(কানজুল উম্মাল, হাদিস নং - ৩৮৭০৪, নুয়াইম বিন হাম্মাদের রচিত "কিতাবুল ফিতানে" হাদিসটি আব্দুর রহমান বিন কায়েস বিন জাবের আল সাদাফী থেকে বর্ণিত হয়েছে)
(৬) উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, মাহদী সাত বছর রাজত্ব করে মারা যাবে, মুসলমানরা তার জানাজার নামাজ আদায় করবে "। (শুধুমাত্র প্রাসঙ্গিক অংশটুকু উল্লেখ করা হয়েছে)
(আবু দাউদ)
যদি ইমাম মাহদী ও ঈসা (আঃ) একই সময়ে আবির্ভাব হতো, তাহলে ঈসা (আঃ) ই মাহদীর মৃত্যুর পর জানাজা নামাজ পড়াতেন, কারণ ঈসা (আঃ) থেকে যোগ্য ইমাম পৃথিবীতে কেউ থাকত না। এখানে স্পষ্ট করে বলা আছে, মাহদীর জানাজার নামাজ মুসলমানরাই আদায় করবেন, ঈসা (আঃ) নয়।
(৭) অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, "মাহদীর মৃত্যুর পর কোন কল্যাণ থাকবে না"
(শুধুমাত্র প্রাসঙ্গিক অংশটুকু উল্লেখ করা হয়েছে)
(মুসনাদে আহমাদ, হাদিসটি ড. আরেফী রচিত "মহা প্রলয়" বইতেও রয়েছে)
মাহদীর মৃত্যুর পর পুনরায় বিশৃঙ্খলা, যুদ্ধ বিগ্রহ শুরু হবে এবং রক্তপাত ছড়িয়ে পরবে যার কারণে হাদিসে বলা হয়েছে, কোন কল্যাণ থাকবে না।
(৮) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, "দিন-রাত্রি ততক্ষণ পর্যন্ত শেষ হবে না, যতক্ষণ না জাহজাহ নামক একজন কৃতদাস রাজত্বের মালিক না হয়"।
(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং - ৭২০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশনী - ৭০৪৫, ইসলামিক সেন্টার প্রকাশনী-৭১০১)
এই ক্রীতদাস খলিফার ব্যাপারে কিতাবুল ফিতানে একটি হাদীস রয়েছে। তিনি ইমাম মাহদীর মৃত্যুর পর আহলে বাইতের দুজন খলিফা হবেন, তারপর মুজারী বংশ থেকে কয়েকজন খলিফা হবেন, ঐ সময় তিনি খলিফা হবেন।
** হযরত কা’বে আহবার (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন মানুষের মাঝে হত্যা ইত্যাদি বৃদ্ধি পাবে তখন লোকজন বলবে এ যুদ্ধ মূলতঃ কুরাইশদের সাথে সম্পৃক্ত। সুতরাং কুরাইশদেরকে হত্যা করলে তোমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। একথা শুনার পর সকলে মিলে কুরাইশদেরকে এমন ভাবে হত্যা করবে, তাদের একজনও বাকি থাকবেনা। কিন্তু এরপর মানুষ নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে লিপ্ত হবে, যেমন জাহেলী যুগে লিপ্ত ছিল এবং গোলামদের (ক্রীতদাস থেকে) একজন মানুষের শাসন ক্ষমতা (খিলাফত) গ্রহণ করবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১১৫২ ]
(৯) হযরত আবু বাহিলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, "দাজ্জালের আবির্ভাবের পূর্বে তিনটি বছর অনেক কষ্টকর হবে। এ সময় লোকজন দুর্ভিক্ষে পতিত হবে। আল্লাহ তায়ালা প্রথম বছর আকাশ কে নির্দেশ দিবেন এক তৃতীয়াংশ বৃষ্টি আটকে রাখার জন্য এবং জমিন কে নির্দেশ দিবেন এক তৃতীয়াংশ ফসল আটকে রাখার জন্য। দ্বিতীয় বছর আল্লাহ তায়ালা আকাশ কে নির্দেশ দিবেন দুই তৃতীয়াংশ বৃষ্টি আটকে রাখার জন্য এবং জমিন কে নির্দেশ দিবেন দুই তৃতীয়াংশ ফসল আটকে রাখার জন্য। তারপর তৃতীয় বছর আল্লাহ তায়ালা আকাশ কে নির্দেশ দিবেন সম্পূর্ণ বৃষ্টিপাত আটকে রাখার জন্য এবং জমিন কে নির্দেশ দিবেন সম্পূর্ণ ফসল আটকে রাখার জন্য। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল, তাহলে তখন মানুষ কিভাবে বেঁচে থাকবে? তিনি বললেন, তাহলিল (আল্লাহর একত্ববাদ ঘোষণা), তাকবির(আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা), তাহমিদের (আল্লাহর প্রশংসার) মাধ্যমে। এগুলোই মানুষের খাদ্যের প্রয়োজন পূরন করবে"।
(সুনানে আহমদ)
** হযরত আবু সাইদ খুদুরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "আখেরি জমানায় আমার উম্মতের মাঝে মাহদীর আবির্ভাব হবে। আল্লাহ তায়ালা তার উপর কল্যাণের বারিধারা বর্ষন করবেন। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে সকল গচ্ছিত সম্পদ উত্তোলন করা হবে। তিনি ধন সম্পদের সুসম বন্টন নিশ্চিত করবেন। গবাদি পশু বৃদ্ধি পাবে এবং মুসলিমরা তাদের হারানো গৌরব ফিরে পাবে"।
(মুস্তাদরাকে হাকেম, সনদ সহিহ)
এখানেও দুটি হাদীসে দুই রকম কথা বলা হয়েছে, কারণ দুটি হাদীস আলাদা দুটি যুগের জন্য প্রযোজ্য। যদি ইমাম মাহদী ও ঈসা (আঃ) একই সময়ে আত্নপ্রকাশ হয়, তাহলে এই দুটি হাদীস কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন? এই দুটি হাদীস থেকেও বুঝা যায়, ইমাম মাহদী ও ঈসা (আঃ) একই সময়ে আত্নপ্রকাশ হবে না।
উপরে বর্ণিত বেশ কয়েকটি সহিহ হাদিস বণর্না করা হয়েছে। আরো অনেক হাদিস আছে যে ইমাম মাহদি এবং ঈশা (আ.) একই সময়ে আর্বিরভাব হবে না। পরবর্তীতে পোস্ট করা হবে ইনশাআল্লাহ।
এখন এগুলো হাদিস দেখার পর বা পড়ার পরও যদি আমাদের এই সমাজ, (বড় বড় মওলানা বা হুজুর বা সাধারণ মানুষ) ভাবে যে ইমাম মাহদি এবং ঈশা (আ.) একই সময়ে আসবেন তাহলে বলা যায় সেটা তাদের নিহায়াত গুরামি ছাড়া আর কিছু না।
বিঃ দ্রঃ এই সহিহ হাদিস গুলার সাথে মিল আছে তেমনি একটি কবিতার বই লেখক (আস-শাহারান) এর "আগামী কথন" একটি আধ্যাত্মিক জ্ঞান সন্বলিত কবিতার বই। চাইলে আপনারা বইতে পরতে পারেন। আশা করা যায় অনেক কিছু জানতে পারবেন।
No comments:
Post a Comment